ঢাকা (১৩ ডিসেম্বর): বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে বিমান ভাড়া বেড়েছে তিন থেকে চার গুণ। টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এয়ারলাইন্সগুলোর বিরুদ্ধে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রবাসী শ্রমিকরা।
করোনা সংক্রমণের দেড় বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভোগান্তি। বিশেষ করে টিকেটের চাহিদা বাড়তে থাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ানো হচ্ছে বিমানের ভাড়া। আগে ঢাকা থেকে দুবাইয়ের বিমান ভাড়া ৩০ হাজার টাকা হলেও এখন তা ৯০ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। একইভাবে ঢাকা থেকে সৌদিআরব রুটের ৪৫ হাজার টাকার বিমান টিকেট এখন ১ লাখ টাকাতেও মিলছে না।
এ বিষয়ে যাত্রীরা বলেন, এখন আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। যদি ১ লাখ টাকা টিকিটের দাম হয়, তাহলে তো যাওয়া সম্ভব নয়।
টিকিটের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে চট্টগ্রাম হাব চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম বলেছেন, একজন শ্রমিক যাত্রীর যদি দুবাই বা মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা গুনতে হয়, সেটি আমাদেরও ভাল লাগছে না।
শুধুই যে আরব আমিরাত কিংবা সৌদি আরব রুটের ভাড়া বেড়েছে তা কিন্তু নয়, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ এশিয়ার সব রুটের বিমান ভাড়া এখন আকাশ ছোঁয়া। প্রতিটি রুটের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তিন থেকে চারগুন। এমনকি অনেক যাত্রী অতিরিক্ত বিমান ভাড়া পরিশোধ করেও কাঙ্ক্ষিত সিট পাচ্ছেন না। ফলে অনেকেরই যেমন ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, তেমনি চাকুরি হারানোর শঙ্কায় শত শত প্রবাসী শ্রমিক।
আটাব এর চট্টগ্রাম জোনের সেক্রেটারি জেনারেল মাহমুদুল হক পেয়ারু জানিয়েছেন, এক লাখ টাকা দিয়েও সিট পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ বিমান তো নিচ্ছেই না। এবং অন্যান্য এয়ারলাইন্সও সিট দিচ্ছে না। তাহলে এখন আমাদের যে মানুষগুলো ছুটিতে এসেছে বা আটকে গেছে বা ভিসার সময় বাড়িয়েছে, এ মানুষগুলো যেতে না পারলে বাংলাদেশের যে কত বিশাল ক্ষতি হবে। সরকারকে তা চিন্তা করতে হবে।
বিশ্বজুড়ে শ্রম বাজার খুলে যাওয়ায় গত দুইমাস ধরে টিকেটের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। অভিযোগ উঠেছে, বিমানগুলোতে পর্যাপ্ত সিট থাকা সত্ত্বেও কৌশলে তা গোপন রেখে আসন সংখ্যা শূন্য দেখানো হয়। সে সঙ্গে যাত্রীদের সাধারণ সিটের পরিবর্তে হায়ার ক্লাসের আসন কিনতেও বাধ্য করা হচ্ছে।
আটাব এর চট্টগ্রাম জোনের সভাপতি আবুল কাশেম ভূইয়া, যাত্রীদের সামর্থ্যের বাইরে ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। এবং বাধ্য হয়ে প্রবাসীরা তা দিচ্ছেন। আমরা বেশ গুরুতর অবস্থায় রয়েছি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের রুটগুলোতে বিমান বাংলাদেশ ছাড়াও এয়ার এমিরাটস, এয়ার এরাবিয়া, ইত্তেহাদ, কাতার এয়ারওয়েজ সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করে। আর প্রতিদিন এসব রুটে বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি যাত্রী পরিবহন হয়।