ঢাকা (১৭ সেপ্টেম্বর) : দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কমলেও সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি ৮০৮টি ল্যাবরেটরিতে ২৯ হাজার ৭৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে এক হাজার ৯০৭ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছিলেন এক হাজার ৮৬২ জন রোগী। সেই হিসাবে শনাক্তের হার গতকালের চেয়ে আজ বেড়েছে।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৯ হাজার ৭৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করায় মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৫টি। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, দেশে যদি করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশে নেমে আসে এবং পর পর চার সপ্তাহ তা অব্যাহত থাকে, তাহলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে বিবেচিত হবে।
দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে জুলাই মাসে শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রায় দেড়মাস সারাদেশে লকডাউন দেয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরত্বারোপ করে।
ফলে সংক্রমণ ধীরে ধীরে নেমে আসে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে করোনা শনাক্তের হার ৬ থেকে ৭ শতাংশে ঘুরপাক খাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ছয় শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে নেমে আসে। তবে আজ ফের শনাক্তের হার বেড়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৭ হাজার ১৪৭ জনে।
মৃত ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ ও নারী ২৫ জন। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৯১৯ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯ জন।
মৃত ৩৮ জনের মধ্যে দশোর্ধ্ব একজন, বিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুইজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৫ জন, ষাটোর্ধ্ব ছয়জন, সত্তরোর্ধ্ব নয়জন, আশির্ধ্ব দুইজন, নব্বইয়ের বেশি বয়সে একজন এবং ১০০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা যান।
বিভাগওয়ারি হিসাবে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে ২৯ জন, চট্টগ্রামে আটজন, রাজশাহীতে চারজন, খুলনায় ছয়জন, বরিশালে তিনজন এবং রংপুরে একজনের মৃত্যু হয়।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।