ঢাকা (১৬ অক্টোবর) : মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে মণপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কমেছে।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার ঝিটকা বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে তা বিক্রি হয়েছে ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকায়।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। বাড়তি দামের আশায় কৃষক ও মজুতদাররা তাদের মজুতকৃত পেঁয়াজ বাজারে আনায় দাম কমেছে।
সরেজমিনে কয়েকজন কৃষক ও আড়তদারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের সময় পেঁয়াজের দাম কম পাওয়ায় অনেক কৃষকই তাদের পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছিলেন।
এছাড়া, অনেক মৌসুমি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও অধিক লাভের আশায় কমদামে পেঁয়াজ কিনে মজুত করেছেন। এখন বাজারে দাম বেশি থাকায় মজুতকৃত পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তারা।
ফলে তারা লাভবান হচ্ছেন। তবে, আর্থিক সমস্যার কারণে মৌসুমের সময় সকল পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন যে সকল কৃষক, তারা লোকসানে পড়েছেন।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের গাং ধুসুরিয়া গ্রামের কৃষক নৈমদ্দিন জানান, গত মৌসুমে তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ এবং ৬৫ শতাংশ জমিতে হালি পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। মুড়িকাটা পেঁয়াজে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা, ফলন পেয়েছিলেন প্রায় ৩০ মণ। তখন তিনি প্রতিমণ পেঁয়াজ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
তিনি বলেন, হালি পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছিল প্রায় ৪৫ হাজার টাকা, ফলন পেয়েছিলেন প্রায় ৭০ মণ। হালি পেঁয়াজও ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। কিছু পেঁয়াজ পঁচে যাওয়ায় এবং বাজারদর কম থাকায় পেঁয়াজ চাষে বেশি লাভ হয়নি।
আলমদী গ্রামের হায়দার মোল্লা জানান, তিনি ২০ শতাংশ জমিতে হালি পেঁয়াজ এবং ৮ শতাংশ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। বাজারদর কম থাকায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে তার প্রায় তিন হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। হালি পেঁয়াজে কোনরকমে খরচ উঠলেও কোন লাভ হয়নি।
নওহাটা গ্রামের মো. গাফফার বলেন, তিনি গতবছর ৬০ শতাংশ জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছেন প্রায় ৯০ মণ। তখন তিনি ২০ মণের মতো পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন এবং বাকি পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন। এখন দাম বেশি পাওয়ায় মজুতকৃত পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তিনি। তিনি বলেন, যারা পেঁয়াজ মজুত করেছেন, তারাই শুধু লাভের মুখ দেখছেন। মজুত করার কারণেই পেঁয়াজে লাভের মুখ দেখছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফফার জানান, পেয়াজের মূল্যটা সাধারণত চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে বাড়ে। বাজারে যখন এর চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকে তখনই এর মূল্যটা বাড়ে। তবে হরিরামপুরে চাহিদা অনুযায়ী পেয়াজের ঘাটতি নেই বলেও জানান তিনি।