ঢাকা (১ জানুয়ারি): শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। নতুন ঠিকানায় শনিবার (১ জানুয়ারি) থেকে মাসব্যাপী হবে এই মেলা। এবারই প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে স্থায়ী কমপ্লেক্সে এ মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
গত বছর থেকেই পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার আসর বসার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তার আর হয়ে ওঠেনি। আজ সকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণিজ্য মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কর্মকর্তারা জানান, এক বছর বিরতির পর বাণিজ্যমেলার আসর বসার কারণে ইপিবি কর্তৃপক্ষ মেলা জমজমাট করতে পুরোদমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবার মেলা সাজছে নতুন রূপে। মাসব্যাপী মেলা সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তা রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। এ বছরও মেলায় প্রবেশের টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বড়দের জন্য ৪০ ও শিশুদের জন্য ২০ টাকা। মেলায় প্রবেশের জন্য ফটক থাকছে তিনটি। আর বের হওয়ার ফটক রাখা হয়েছে দুটি। টিকিট কাউন্টার থাকবে ৪০-৪৫টি। বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকেও অনলাইনে টিকিট কেনা যাবে।
এবারের মেলায় এক্সিবিশন সেন্টারের মোট ২২৫টি স্টলের মাঝে ২২০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে বিদেশি স্টল রয়েছে মাত্র ১০টি। এর মধ্যে চারটি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ছয়টি স্টল। করোনা মহামারী ও মেলায় অংশ নিতে প্রস্তুতির সময় কম পাওয়ায় বিদেশি ব্যবসায়ীরা খুব বেশি অংশ নিতে পারেননি। মেলায় প্রদর্শন করা হবে দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি।
জানা গেছে, মেলায় আসা দর্শনার্থীদের যাতায়াতের ভোগান্তি দূর করতে মেলার উদ্বোধনের দিন থেকেই কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাণিজ্যমেলা পর্যন্ত বিআরটিসির ৩০টি বাস চলবে। এছাড়া দর্শনার্থীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর সড়কের ০০২ নম্বর প্লটে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। মোট ৩৫ একর জমির ২০ একরের ওপর নির্মাণাধীন এই সেন্টারে আধুনিক কার পার্কিং, সম্মেলন কক্ষ, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, ফুড কোর্ট, কিডস জোন, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র এবং আধুনিক সুবিধাসংবলিত ডরমিটরিসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। এছাড়া এক্সিবিশন সেন্টারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা, আধুনিক ব্যবস্থাসহ বিদ্যুতের নিজস্ব সাব-স্টেশন, সার্ভিস রুম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্ট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে একসঙ্গে পাঁচশোর বেশি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই এক্সিবিশন সেন্টারটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা।