ঢাকা(০৮ জুন): রাষ্ট্রের খাদ্যের পুষ্টির পেছনে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।তাই এই পুষ্টি ও খাদ্যের নিরাপদতার ঠিকঠাক জ্ঞান অর্জনের রাষ্ট্রের এই অর্থ বাঁচবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের প্রায় ১৮টা মন্ত্রণালয় বিভাগ পুষ্টি নিয়ে কাজ করে। বছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যায় হয় রাষ্ট্রের খাদ্যের পুষ্টির পেছনে। আমরা যদি খাদ্য নিরাপদ করতে পারতাম এবং পুষ্টি ও খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে মানুষকে ঠিকঠাক জ্ঞান দিতে পারতাম তাহলে রাষ্ট্রের এই ৩৫ হাজার কোটি টাকা লাগতো না। সুতরাং আমাদের সমস্যাটা কোথায় সেটা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধান করতে হবে সবকিছু সাদা চোখে দেখলে হবে না।
বুধবার রাজধানীর শাহবাগস্থ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে “গবেষণা বিষয়ক সূচনা কর্মশালা ও পুরস্কার প্রদান” (Inception workshop and award giving ceremony) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, নিরাপদ খাদ্য সারা দেশের জন্য একটা বার্নিং ইস্যু। আমাদের দেশের জন্যতো বটেই। আমরা দীর্ঘদিন যাবত জনগণের খাদ্য নিরাপদতার কথা বলে এসেছি। আমরা সবসময় জনগনের পাকস্থলির চাহিদা পূরণ করার জন্য বলে এসেছি। দেশে বড় বড় যে সফলতাগুলো আছে তার মধ্যে আমাদেরও কিছু অর্জন আছে।
আমরা স্বাধীনতার পর এক কোটি মেট্রিকটন খাদ্য-শস্য যখন উৎপাদন করতাম সেখান থেকে ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ফেলেছি ৬ কোটি মেট্রিকটন খাবার উৎপন্ন করছি। যখন মানুষ ৭ কোটি ছিল তখন খাবারে কিছু কিছু সংকট ছিল। এখন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ও তার সদিচ্ছায় এবং বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ও কৃষকদের প্রচেষ্টায় আমরা আজ এই পর্যায়ে এসেছি। এমন নয় যে এই বছরে আমি অধিক খাদ্য পণ্য উৎপাদন করলাম কিন্তু আগামী বছর আমি ব্যর্থ হলাম তাহলে কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। আমাদের যদি কোন কারণে ৫০ শতাংশ খাদ্য-শস্য ক্ললাপস করে তাহলে পৃথিবীর কোন দেশ থেকে আমরা খাবার পাবো না কারণ আমরা ধান নির্ভর দেশ। খাদ্যশস্যের দিক থেকে আমরা অনেক বড় সফলতা অর্জন করেছি। খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সরকারের অন্যন্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। সরকারের প্রায় ১৮টা মন্ত্রণালয় বিভাগ পুষ্টি নিয়ে কাজ করে। বছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যায় হয় রাষ্ট্রের খাদ্যের পুষ্টির পেছনে। আমরা যদি খাদ্য নিরাপদ করতে পারতাম এবং পুষ্টি ও খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে মানুষকে ঠিকঠাক জ্ঞান দিতে পারতাম তাহলে রাষ্ট্রের এই ৩৫হাজার কোটি টাকা লাগতো না। সুতরাং আমাদের সমস্যাটা কোথায় সেটা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধান করতে হবে সবকিছু সাদা চোখে দেখলে হবে না।
জাপান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, জাইকা শুরু থেকেই আমাদের সহযোগিতা করছে এবং সামনে আরও বড় সহযোগিতার হতে বাড়িয়ে দিয়েছেন। জাইকার সহযোগিতার পাশাপাশি আশার আলো দেখাচ্ছে দেখাচ্ছে ডব্লিউএফপি, এফএও-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
খাদ্য সচিব বলেন, পথ অনেক লম্বা এই বলে তো আমি ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের ধীরে ধীরে এগুতে হবে। এই প্রয়োজনিয়তা অনুভব করেই প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিকক প্রচেষ্টায় ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে কোন প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে সময় লাগে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি এত অল্প সময়েও এমন একটি যায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে।
এখনও কিছু কিছু ইস্যু আছে যেগুলো সমাধান করতে অনেক সময় লাগবে। তবে সময় লাগলেওতো আমাদের থেমে থাকলে চলবে না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক গবেষনায় ৭ জনকে মোট ৭৪ লাখ টাকা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের সদস্য মনজুর মোরশেদ আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট এর সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার আরিফুল ইসলাম, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ডক্টর মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রধান ও ডক্টর গোলাম ফেরদৌস চৌধুরীসহ প্রমুখ।