গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের প্রধান সমন্বয়কারী ও ইন্টারপোল কর্তৃক রেড নোটিশ জারিকৃত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি চন্দন কুমার রায়কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব।
সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকা থেকে গ্রেফতারের তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যাম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন জানান, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতের ছোট বোন বাদী হয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মলায় চন্দন কুমার রায়সহ ৭ জনকে ফাঁসিতে ঝুলানোর আদেশ দেন।
র্যাব আরো জানায়, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যমতে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল কাদের খানের পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আবদুল কাদের খান নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জ এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদ সদস্য থাকাকালে বিভিন্ন মামলায় দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পুরনো ক্ষোভ, রাজনৈতিক বিরোধ, আধিপত্য বিস্তার এবং তৎকালীন সংসদ সদস্যকে সরিয়ে পূনরায় সংসদ সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষার কারণেই আবদুল কাদের খান এ হত্যার পরিকল্পনা করেন।
র্যাব জানায়, ২০১৬ সালে অক্টোবর মাসে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। চন্দন রায় লিটনের ঢাকা থেকে গাইবান্ধা আগমনের তথ্য দেয়। তারা মাঝপথে হত্যার পরিকল্পনা নিলেও এমপি লিটন গাবতলী এসে ফিরে যাওয়ায় তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তারা এমপি লিটনকে তার নিজ বাড়িতেই হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডে তাদের সহযোগী মেহেদী, শাহীন, রানা, শামসুজ্জোহা ও ড্রাইভার হান্নান অস্ত্র চালানো ও হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত পলায়েনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
হত্যাকাণ্ডের ১৫ থেকে ১৬ দিন পর চন্দন কুমার রায় তার আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী দেশে নাম পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে এবং নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে শাওন রায় নামে ভূয়া নাগরিকত্ব, আধার/রেশন কার্ড করে সেখানে অবস্থান করে।
গ্রেফতারকৃত চন্দন কুমার রায় ২০১০ সালের দিকে রাজধানীর একটি অনলাইন পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করে। দুই বছর সাংবাদিকতা করার পর গাইবান্ধা ফিরে স্থানীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।